সরওয়ার আলম শাহীন,সীমান্ত এলাকা থেকে :

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা বনবিভাগের ৪ শতাধিক একর জমি দখল করে নিয়েছে। একশ্রেণীর দালালের সহায়তায় গিলে খাচ্ছে সরকারের রিজার্ভ বনভুমি ও সামাজিক বনায়ন।রোহিঙ্গারা প্রতিদিন সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে একরের পর একর বনভূমি দখলে নিয়ে ঘরবাড়ি তুলছে প্রতিদিন নতুন নতুন। একশ্রেণীর রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধির প্রত্যক্ষ মদদে গড়ে তোলা হচ্ছে একের পর বস্তি। বিশেষ করে উখিয়ার বালুখালী,বালুখালী ঢালার মুখ, থাইনখালী হাকিম পাড়া,তেলখোলা, টিভি টাউয়ারের পাশে সহ এলাকায় গড়ে ঊঠেছে একের পর বস্তি। এসব এলাকার সামাজিক বনায়ন ধ্বংসে মেতে উঠেছে এ সব রোহিঙ্গারা। এ বিষয়ে নিরব ভূমিকা পালন করছে স্থানীয় বনবিটের বহনকর্মীরা। বনবিভাগ বলছে, এই বনভূমি রক্ষায় জেলা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনও অভিযোগ উঠেছে, বনভূমি দখলে সহযোগিতা করছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট।রোহিঙ্গাদের দখলে এবার সামাজিক বনায়ন শুধু নয়, বসতভিটার গাছপালাও রাতের আধাঁরে কেটে নিয়ে যাচ্ছে এমন অভিযোগেরও শেষ নেই। সরকারের জায়গা হলেও জমিদারী করছে পাবলিকরা।এসব বস্তিতে দালাল ও প্রভাবশালী মহল নতুন রোহিঙ্গা বস্তির প্রতি গৃহের পরিবার ভিত্তিক এককালীন অফেরৎ যোগ্য সেলামী আর মাসিক খাজনা আদায় করছে ১৯০ সদস্যের কথিত ভলান্টারিয়াস নামক চাদাঁবাজ সিন্ডিকেট। যেসব সিন্ডিকেটে রয়েছে ৪০জন করে গ্রামবাসী ও ১৫০জন রোহিঙ্গা ভলান্টারিয়াস নামক চাদাবাজঁ।

স্থানীয় বনবিভাগ সূত্র জানায়, ২০০২-৩ থেকে ২০১৪-১৫ সাল পর্যন্ত সময়ে গড়ে ওঠা প্রায় ৫ শতাধিক একর সংরক্ষিত বনভূমির সামাজিক বনায়ন রয়েছে উখিয়ার উখিয়ার ঘাট,থাইংখালী,মোছারখোলা বনবিট আওতাধীন।এসব বন এলাকার মধ্যে উখিয়ার ঘাট ও থাইংখালী বনবিটের আওতাভুক্ত প্রায় ৪শত একর সামাজিক বনায়নের অন্তত ৫ কোটি টাকার গাছ উজাড় হয়ে গেছে বলে সামাজিক বনায়ন উপকারভোগীরা জানান। সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী ডাঃ ফিরোজ আহমদ ও মৌলানা গফুর উল্লাহ জানান,বালুখালীতে নতুন রোহিঙ্গা বস্তি হওয়ার কারণে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বনভুমি। সরকার ও উপকারভোগীরা বনের গাছ হারিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে বলে তারা জানান। কিন্তু এই সামাজিক বনায়নের গাছ সাবাড় করে সেখানে নতুন করে একের পর একক রোহিঙ্গা বস্তি গড়ে উঠছে। এতে প্রায় ৪শত একর সামাজিক বনায়ন চলে গেছে রোহিঙ্গাদের দখলে। পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোজাফফর আহামদ জানান,যারা সামাজিক বনায়ন বরাদ্দ পেয়েছে,তারা মনে করছে গাছ কেটে নিলেও জায়গা পেয়ে যাবেন। চিরস্থায়ী দখল করবেন। তাই গাছ রক্ষায় উপকারভোগীরা রক্ষার চেয়ে যোগসাজশে বেচা -বিক্রিতেও জড়িত।বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বালুখালী,থাইনখালীতে একাধিক নতুন বস্তি নির্মাণের কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গা বস্তি উচ্ছেদ ও বনভুমি রক্ষায় উর্ধ্বতন বরাবরে অভিযোগ প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, রোহিঙ্গাদের বসতি গড়ে তুলতে সহযোগিতা ও ইন্ধনের জন্য উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের একাধিক ইউপি সদস্যের হাত রয়েছে। মূলত তার ইন্ধনেই রোহিঙ্গারা বনবিভাগের জমি একের পর এক দখলে নিচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাব মতে, মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে নতুন করে আশ্রয় নিয়েছে ৯০ হাজার রোহিঙ্গা। স্থানীয়দের হিসেবে যা ৩ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এরপরও প্রতিদিন শতশত রোহিঙ্গা টেকনাফের লেদা, নয়াপাড়া, শামলাপুর ও উখিয়ার কুতুপালং ছাড়াও নতুন করে বালুখালী,হাকিম পাড়া,তাজিনামার খোলা এলাকার বনভূমি দখল করে আশ্রয় নিচ্ছে।